Type Here to Get Search Results !

হিমি (একটি ভীতু মেয়ের গল্প)

হিমি  (একটি ভীতু মেয়ের গল্প)
একটি ভীতু মেয়ের গল্প

 ভয় বিষয়টি বড়ই আশ্চর্য তাই না!! তাহলে চলুন একটি গল্প শোনা যাক , হিমির গল্প। হ্যাঁ হিমি হল একটি ছোট্ট মেয়ের নাম। যার বয়স পাঁচ বছর। মেয়েটির স্কুল জীবন শুরু হয়ে এক বছর হয়ে গিয়েছিল। ছোট্ট হিমি যখন বুঝতে শুরু করেছিল, শিখতে শুরু করেছিল , তখনই ভয় পাওয়াটাই সে আগে শিখে যায়। জীবনের প্রথম ধাপ থেকেই হিমি ভিতু হয়ে ওঠে। যার একটি মাত্র কারণ ছিল, আর সেটি ছিল ভূতের ভয়। ছোটবেলায় আমরা বাচ্চাদের কত ভয় না দেখায়, তার মধ্যে প্রচলিত ছিল ভূতের ভয় দেখানো। হিমিকেও এমনটিই করা হতো। আর মেয়েটি খুবই কৌতূহলীও ছিল এসব শুনতে।  মেয়েটি ভয়ো পেত আবার আনন্দও পেত। এমন হতে হতে একটা সময় এসেছিল যে মেয়েটি এসব নিয়ে ভাবতে শুরু করে । তাই কোথাও এমন কোন কিছু হলে অর্থাৎ প্যারানরমাল বিষয় যেমন ধরুন ,হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে দরজা কোন কারনে আপনা আপনি খুলে যাওয়া বা হঠাৎ জানালা বন্ধ হয়ে গিয়েছে কোথাও কোন শব্দ হয়েছে ,কোন জিনিস পড়ে গিয়েছে। আরো নানান কিছু তাকে আরো কৌতুহলী করে তোলে। তাই হিমি অনেক ভয় পেত এবং মনে করত যেগুলো সব ভুতেই করে। তাই একদিন  মেয়েটির সাথে এমন কিছু ঘটে, যা সে কখনো কল্পনাই করেনি। হিমির পরিবার যৌথ, চাচাতো জেঠাতো ভাই বোন ,চাচা চাচি, জ্যাঠা জেঠি সবাই মিলে একসাথে থাকতো। আর কাজিনরা একসাথে হলে তো হিমিকে ভূতের ভয় দেখানো টাই তাদের একমাত্র কাজ। কাজিনদের মধ্যে একজন ছিল খুবই দুষ্ট প্রকৃতির, তার নাম ইরিনা। ইরিনা একদিন একটি প্ল্যান করে, প্ল্যানটি হল ইরিনা চেয়েছিল হিমিকে ভয় দেখাতে। তাই প্ল্যানটি এক্সিকিউট করার আগে কিছুদিন ধরে ইরিনা, তার বোন হিমিকে  একটি ভূতের গল্প শোনায়। ওই গল্পে ভুতের আলাদা একটি রূপ ছিল। আলাদা একটি নাম ছিল। নামটি ছিল চশমা আলী। ওই ভূত নিয়েই ইরিনা সারাদিন হিমিকে নানা রকম কাহিনী শুনাতো। এভাবে করতে করতে হিমির মনে একটি ভয় তৈরি হয়ে যায়। একদিন রাত বারোটার সময় ঘরে বিদ্যুৎ চলে যায়। সময়টা ছিল ২০০০ সাল, তখন এত জেনারেটর এলইডি অথবা আধুনিক সকল লাইটের ব্যবস্থা ছিল না, সবাই তখন মোমবাতি অথবা হারিকেন ব্যবহার করত আলোর জন্য। তাই যেহেতু বারোটার সময় কারেন্ট চলে গিয়েছে এবং এবং আগেই বলেছিলাম হিমিদের যৌথ পরিবার তাই বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার সাথে সাথেই পরিবারের সবাই বসার রুমে এসে গল্প করছিল। মোমবাতি জ্বালিয়ে মৃদু আলোতে তারা সবাই অর্থাৎ ঘরের বড়রা গল্প করছিলেন। ঘরের সবগুলো রুম ঘুটঘুটে অন্ধকার কিছুই দেখা যাচ্ছে না। চারিদিকে কালো আর কালো। এইদিকে হিমির রুমে তার মা তাকে ঘুম পাড়িয়ে বসার রুমের দিকে এগিয়ে গেলেন। হিমির রুম থেকে বসার রুমে যেতে তিনটা রুম পার হতে হয়। ওই তিনটা রুমই অন্ধকার ছিল। হিমির মা একটা হারিকেন জ্বালিয়ে তার রুমে রেখে গেছেন, আরেকটি মোমবাতি হাতে নিয়ে বসার রুমের দিকে এগিয়ে গেলেন। তার কিছুক্ষণ পরে হঠাৎ হিমির ঘুম ভেঙে যায়, হারিকেনের মৃদু আলোতে সে যখন তার মাথা ডান পাশে তাকাই তখন হিমি দেখতে পায় ঠিক তার শোনা গল্পের মতই একটি ভূত তার সামনে এগিয়ে আসছে। পরনে একেবারেই কালো পোশাক, মুখটিও ঢাকা কালো কাপড়ে, বোঝা যায় তো শুধু একটাই জিনিস আর তা হল বড় বড় গ্লাসের চশমা। হিমি কিছু বুঝে উঠতে না উঠতেই ভূতটি , হিমির কাছে চলে আসতে থাকে। মেয়েটি তখন তাড়াহুড়ো করে শোয়া থেকে উঠে এক দৌড়ে বসার রুমের দিকে চলে যায়। সেখানে গিয়ে হিমি সবাইকে সব কিছু খুলে বলে। কিছুক্ষণ নিস্তব্ধ থেকে তারপর সবাই অনেক জোরে হেসে ওঠে, ছোট্ট হিমি কিছুই বুঝতে পারে না। হাসতে হাসতে ওই চশমাআলী ভূতটিও চলে আসে। এবং হাসতে থাকে তারপর মুখ থেকে কালো কাপড় সরিয়ে ফেলে, হিমি অবাক হয়ে যায়। চশমা আলী ভূতটি আর কেউই নয় তার ইরিনা আপু। তারপর ইরিনা তাকে জড়িয়ে ধরে এবং সবকিছু বুঝিয়ে বলে। এভাবে সবাই হিমি কে একে একে জড়িয়ে ধরে এবং তাকে ভয় না পেতে বলে। তার বড় আপু তাকে বলে যে তুই সারাদিন ভয় পেতে থাকোস । এভাবে করে হিমি কিছুক্ষণ রেগে থাকে, কিন্তু ছোট্ট হিমি অতি দ্রুতই স্বাভাবিক হয়ে যায় , হিমিও হাসতে থাকে। এভাবে মেয়েটির ভূতের ভয়টিও কেটে যায়। ছোট্ট হিমি এখন বড় হয়েছে, আগের মত এখন ভয় পাই না। বরঞ্চ হিমি এখন প্যারানরমাল এসব কিছু নিয়ে গবেষণা করে।

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.